বিপিএল: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গত বৃহস্পতিবারই এক চিঠিতে পাকিস্তান
ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) জানিয়েছে এই মুহূর্তে সফর করতে পারবে না। ওই
সিদ্ধান্তটাই সোমবার এক মতবিনিময় সভায় আনুষ্ঠানিক জনসম্মুখে নিয়ে এলেন
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
সাংবাদিকদের তিনি জানালেন,‘এই মুহূর্তে যেহেতু পাকিস্তানে সহিংস ঘটনা ঘটেই চলেছে এবং বাংলাদেশে এটা নিয়ে যেহেতু উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আছে এবং এর বিরুদ্ধে কথা হচ্ছে, সেহেতু এই পরিস্থিতি এখনই পাকিস্তানে যাওয়াটা সমীচীন হবে না।’
কেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে যেতে হবে সে বিষয়ে পরিষ্কার করেছেন বিসিবি সভাপতি,‘পাকিস্তান সফর নিয়ে আগেও আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। এখন আবার সেই ইস্যুটা তুলে ধরছি। আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে আমরা পাকিস্তান যাওয়ার কমিটমেন্ট করে এসেছি। এবং আইসিসির কার্যবিধিতে সেটা পরিষ্কারভাবে লেখাও আছে। এমন স্পষ্টভাবেই লেখা আছে যে আইসিসি যদি ম্যাচ অফিশিয়াল নাও পাঠায়, তারপরও আমরা সেখানে গিয়ে না খেলার কথা বলতে পারব না। তার মানে অনেকটা বাধ্যতামূলক আমাদের পাকিস্তানে যাওয়া।’
সাংবাদিকদের তিনি জানালেন,‘এই মুহূর্তে যেহেতু পাকিস্তানে সহিংস ঘটনা ঘটেই চলেছে এবং বাংলাদেশে এটা নিয়ে যেহেতু উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আছে এবং এর বিরুদ্ধে কথা হচ্ছে, সেহেতু এই পরিস্থিতি এখনই পাকিস্তানে যাওয়াটা সমীচীন হবে না।’
কেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে যেতে হবে সে বিষয়ে পরিষ্কার করেছেন বিসিবি সভাপতি,‘পাকিস্তান সফর নিয়ে আগেও আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। এখন আবার সেই ইস্যুটা তুলে ধরছি। আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে আমরা পাকিস্তান যাওয়ার কমিটমেন্ট করে এসেছি। এবং আইসিসির কার্যবিধিতে সেটা পরিষ্কারভাবে লেখাও আছে। এমন স্পষ্টভাবেই লেখা আছে যে আইসিসি যদি ম্যাচ অফিশিয়াল নাও পাঠায়, তারপরও আমরা সেখানে গিয়ে না খেলার কথা বলতে পারব না। তার মানে অনেকটা বাধ্যতামূলক আমাদের পাকিস্তানে যাওয়া।’
বিসিবির সাবেক সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল আইসিসির সভায় এই লিখিত দিয়েছিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান জাকা আশরাফকে। এরপর থেকে পাকিস্তানে যাওয়ার বিষয়টি জোরালো হয়েছে। গত এপ্রিলেই বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফরের কথা ছিল। কিন্তু হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় সেবার সফর বাতিল হয়ে যায়। মোস্তফা কামাল আইসিসির সহ-সভাপতি হওয়ার পর ফের পাকিস্তান সফরের ইস্যুটি আলোচনায় আসে। বর্তমান সভাপতি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পাকিস্তান ইস্যুতে ইতিবাচক কথাই বলে আসছিলেন। তিনি আগে অনেকবারই বলেছেন, প্রতিশ্রুতি থাকায় আমাদেরকে পাকিস্তানে যেতেই হবে। সে অনুযায়ী সফরের প্রস্তুতি এগোচ্ছিল। আগামী ১২ ও ১৩ জানুয়ারি লাহোরে একটি টি-টোয়েন্টি এবং একটি ওয়ানডে খেলতে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। পিসিবির কাছ থেকে নিরাপত্তা পরিকল্পনাও এনেছে বিসিবি। ওদিকে পিসিবি সভাপতিও তার দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এক সংক্ষিপ্ত সফরে আসছে। সফর চূড়ান্ত করায় আন্তর্জাতিক মিডিয়ার মাধ্যমে জাকা আশরাফ বিসিবিকে ধন্যবাদও দিয়েছেন। এত কিছু হয়ে যাওয়ার পর বিসিবি হঠাৎ করেই ভোল পাল্টে ফেলে। কারণ দেশের মানুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফরের বিরোধিতা করছে। এমনকি পাকিস্তানে দিন দিন নিরাপত্তা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে খারাপের দিকে যাচ্ছে।
তবে অদূর ভবিষ্যতে যে পাকিস্তান সফর করবে না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল তা বলেননি বিসিবি সভাপতি। অত্যন্ত কৌশলে তিনি বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছেন,‘ওদের সঙ্গে যে কমিটমেন্ট সেটা নিঃশর্ত। বেশি কথা বলে পাকিস্তানকে ক্ষেপিয়ে দিতে চাচ্ছি না। তাহলে বিপিএলে খেলোয়াড় দিবে না। সামনে লিগে দিবে না। বিশ্বকাপের সময়ও ঝামেলা করতে পারে। তাই বেশি কিছু বলতে গেলেই বিপদ। আমরা বলেছি পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে দেশবাসী উদ্বিগ্ন। পাকিস্তানের পরিস্থিতিও উন্নতির দিকে নয়, বরং অবনতির দিকে। তাই বলেছি এই মূহুর্তে আমরা যেতে পারব না। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি উন্নতি হয়, তখন আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। এর বেশি কিছু বলাই বিপজ্জনক।’
পাকিস্তান সফরে আইসিসির কাছ থেকে সাড়া না পেয়েই শেষপর্যন্ত ব্যাকফুটে হাটার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি,‘আইসিসিকে আমরা পর পর পাঁচটি চিঠি দিয়েছি। ওখান থেকে কোন জবাবই আসেনি। জিনিসটা বেশ ঝামেলার।’
পাকিস্তান সফর ইস্যুকে জাতীয় সমস্যা বলে উল্লেখ করেন বিসিবি সভাপতি,‘এটা জাতীয় সমস্যা। এখানে সবচেয়ে ভালো হতো যদি ভোটাভুটি করতে পারতাম। এটা অত্যন্ত জটিল বিষয়। এটা নিয়ে একেকজন একেক রকম কথা বলে যাচ্ছে। আমার কাছে যদি কেউ জানতে চান, তাহলে বলব যে- কোনো জায়গায় যে কোনো বিষয়ে কমিটমেন্ট করা হলে যাওয়াই উচিৎ।’
তবে সাবেক সভাপতির প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে চাননি নাজমুল হাসান,‘কেন কমিটমেন্ট দেওয়া হলো, এটা আসলে তখন যারা ছিলেন বা যিনি দিয়েছিলেন, তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমার ধারণা নিশ্চয়ই ওনাদের কোন যুক্তি ছিল। খামোখাই কমিটমেন্ট করার কথা না।’
এক অর্থে মোস্তফা কামালের সাফাই গেয়েছেন বিসিবি সভাপতি,‘আমি এখানে কোনো ব্যক্তি স্বার্থ দেখছি না। টিভি টক শো তে দেখছি অনেকেই এটাকে ব্যক্তি স্বার্থ বলছেন। আইসিসির সহসভাপতি হওয়ার জন্য নাকি এমনটা করেছেন। কিন্তু আমি বলব এটা আমাদের জাতীয় অর্জন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের একজন আইসিসির সভাপতি হবেন, এর চেয়ে বড় জিনিস আর কী হতে পারে। কবে আবার এমন সুযোগ আসবে এটা আমরা কেউ জানি না। অন্তত ১০-২০ বছরের মধ্যে আসবে বলে আমার মনে হয় না।’
সবশেষে পাকিস্তান সফরের প্রতিশ্রুতির ইস্যুকে নিজেদের ঘাড়েই নিলেন নাজমুল হাসান,‘প্রথম কথা হলো এটা প্রেসিডেন্ট করেননি। আইসিসির কাছে এটা বাংলাদেশের কমিটমেন্ট। তখন কী পরিস্থিতিতে হয়েছিল আমরা সেটা জানি না। এটা বিসিবির কমিটমেন্ট, বাংলাদেশেরও। আমি এভাবেই দেখছি।’
No comments:
Post a Comment