Monday, December 17, 2012

পাকিস্তান সফর নিয়ে তবু বিচলিত ক্রিকেটাররা | Pakistan tour for Bangladesh 2013


বিসিবি :: মধ্যবর্তী সময়ে পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় না নিলে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে পাকিস্তানের উদ্দেশে যাত্রা করবে বাংলাদেশ জাতীয় দল। ১১ জানুয়ারি সকালে পৌঁছে পরদিনই নেমে পড়বে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। পরপর দুই দিনে একটি করে ওয়ানডে এবং টোয়েন্টি টোয়েন্টি খেলে ঢাকায় ফিরে আসবেন মুশফিকুর রহিমরা।
একটু ভুল হলো, মুশফিকুর রহিম পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেনই, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে তিনি না গেলেও জাতীয় দলই পাঠাবে বিসিবি। অধিনায়ক কিংবা অন্য কোনো ক্রিকেটার না-ও যেতে পারেন, এমন সম্ভাবনা 'বেঁচে' আছে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের দেওয়া সাম্প্রতিক একটি ঘোষণায়_কেউ যেতে না চাইলে তাঁকে জোর করে পাকিস্তানে পাঠাবে না বোর্ড। টিম ম্যানেজমেন্টকেও 'ব্ল্যাংক চেক' দিয়েছেন তিনি। এতে করে স্বস্তির হাওয়া বয়ে যাওয়ার কথা পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে কম-বেশি উদ্বিগ্ন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মনে। কিন্তু উল্টোটা হচ্ছে বলেই খবর। 'আইসিসি বলছে বোর্ড চাইলে পাকিস্তানে দল পাঠাতে পারে।

এখন বিসিবি গুরুত্ব দিচ্ছে ক্রিকেটারদের ইচ্ছাকে। তার মানে কি আইসিসির মতো যেকোনো ধরনের ঝুঁকির দায় নিতে চাচ্ছে না বিসিবিও', একজন ক্রিকেটারের নিকটাত্মীয় গতকাল এমন প্রশ্নই তুলেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবি ঘনিষ্ঠ একজনের মন্তব্যেও পাকিস্তান সফরকে 'ঐচ্ছিক' করে দেওয়ার পেছনে এটিকে একটি কারণ বলেই মনে হচ্ছে, 'পাকিস্তান যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবু শতভাগ নিশ্চয়তা তো কেউ দিতে পারে না। যদি কিছু হয়, তাহলে? এ কারণেই পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে সবার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।'
গত এপ্রিলে পাকিস্তান সফরের ব্যাপারে বোর্ড থেকে ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকের কাছে জানতে চাওয়া হবে কি না, এ নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। এবার বোর্ড উদ্যোগী হওয়ায় আগ বাড়িয়ে কৌতূহল প্রকাশ করতে হচ্ছে না বাংলাদেশ অধিনায়ককে। বোর্ড থেকেই তো জানতে চাওয়া হবে। জানা গেছে, পাকিস্তান সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পরই জনে জনে জিজ্ঞাসা করবে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি।
অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্টের বিদেশি সদস্যদের পাকিস্তান সফরে না যাওয়াটা একরকম নিশ্চিত। ভারপ্রাপ্ত কোচ শেন জার্গেনসেন তাঁর আপত্তির কথা অনানুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটিকে নাকি জানিয়েও দিয়েছেন। সদ্যই অব্যাহতির চিঠি পাওয়া জেসন সুইফট আগ বাড়িয়ে বাংলাদেশের দাবি মেটাবেন, এতটা কেউ আশা করছেন না। আর নিজে থেকে অব্যাহতি নেওয়ায় কোনো দায়বদ্ধতা নেই গ্রান্ট লুডেনের। ফিজিও বিভব সিংয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও 'না-ই' হওয়ার কথা। তার মানে এই নয় যে কোচিং স্টাফ ছাড়াই পাকিস্তানে দল পাঠাবে বিসিবি। স্থানীয়দের মধ্য থেকে বিকল্প টিম ম্যানেজমেন্ট দাঁড় করাবে বোর্ড।
কিন্তু সেরা দল নিয়ে পাকিস্তানে 'ঝটিকা' সফরে যেতে পারবে বাংলাদেশ? যে বা যাঁরাই যান না কেন, সাকিব আল হাসানের পাকিস্তানে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের পর অন্তত ছয় সপ্তাহ বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে বিশ্বসেরা এই ওয়ানডে অলরাউন্ডারকে। ঘড়ি ধরে সেরে উঠলেও ১০ জানুয়ারি শেষ হবে সাকিবের পুনর্বাসনের মেয়াদ। ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার এক দিন পরই খেলোয়াড়দের মাঠে নেমে পড়ার ঘটনা নেই বললেই চলে। সাকিবের সঙ্গে তামিম ইকবালের পাকিস্তানে যাওয়া নিয়েও রয়েছে সংশয়। আগামীকাল নিউজিল্যান্ড যাচ্ছেন বাঁহাতি এই তারকা ওপেনার। ওয়েলিংটনের হয়ে সেখানকার ঘরোয়া লিগ খেলে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশে ফেরার কথা তামিমের। এ অবস্থায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করে পাকিস্তান সফরে না-ও যেতে পারেন তিনি। না যেতে চাওয়াদের দল ভারীও হতে পারে। আবার শেষমেশ সাকিবকে ছাড়া পূর্ণ শক্তির বাংলাদেশ দলও উঠে পড়তে পারে করাচিগামী ফ্লাইটে।
এদিকে সফরসূচি চূড়ান্ত হয়নি এখনো। ১৮ জানুয়ারি বিপিএলের দ্বিতীয় আসর শুরু হবে, কাজেই প্রাথমিক আলোচনায় তিন দিনের পাকিস্তান সফরে ৯ জানুয়ারি যেতে চেয়েছিল বিসিবি। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলকে বহনকারী বাসের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পুনরায় শুরুর দিনের আকর্ষণ বাড়াতে চায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। শনি এবং রবিবার পাকিস্তানে সাপ্তাহিক ছুটি। তাই ১২ ও ১৩ জানুয়ারিতে ম্যাচ আয়োজনের বিষয়টি বিবেচনায় আছে বিসিবিরও। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে পাকিস্তানে পাঁচ ম্যাচের একটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেটিও ছিল পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পুনরুজ্জীবনে বাংলাদেশের সহযোগিতা।

No comments:

Post a Comment

LinkWithin

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...